অভিজিত
আমি একা, বহুজন, আমি স্থিতি এবং প্রবাহ
আমার সামনে পিছে অহং-এর অন্ধ কালো গুহা
গুহার গহন থেকে ভেদ-দ্বেষ-হিংসার প্রদাহ
ছাই করে দিতে চাইছে প্রাণধর্ম; শুধুই অসূয়া
অন্তিম ধর্মের তত্ত্ব, ধর্মের চূড়ান্ত সত্যরূপ
হয়ে ছারেখারে দিচ্ছে মানুষের সাজানো বাগান
উত্তপ্ত রক্তের ছাঁটকে মনে হচ্ছে বিদগ্ধ বিদ্রূপ
উল্লাসে ও আর্তনাদে কথা ও নৈঃশব্দ খানখান
পিষে যেতে পারি আমি বেশরম সভ্যতার দাঁতে
এমন আঁধার দিনে আলো হয়ে পোড়াটাই রীত
সাবেক অন্ধতার জটাজাল জড়ানো দুহাতে
মরেও মরি না, ফের জন্ম নিই লক্ষ অভিজিত . . . .
আগুন
আমার প্রেম জায়গা খোঁজে ভিতর বাগে
অন্ধকারে আমার দেশে আগুন জাগে
আগুন জাগে কাশ্মীরে ওই আমার দেশে
প্রেমের আগুন হার না মানা জ্বলছে হু হু
কত প্রণয় উজাড়? কজন নিরুদ্দেশে?
বিরহ রসে উথলে ওঠে আমার রুহু
ছুটছে গুলি বছর ভরে, তাজা বুলেট
লক্ষ্য মাথা, হৃদয় এবং নিশানা পেট
নিভছে আলো দিন-রাতে ওই দুটো চোখের
আসবে স্বরাজ, সময় কোথায় কোমল শোকের?
যদিও প্রেমে মগ্ন আমি, বিষাদকাতর
শুনছি যেন ঘন্টা বাজে দূর পাহাড়ে
জাগছে মাটি, বরফ জাগে, জাগছে পাথর
কত যুগের বলাত্কার এই? লক্ষ্য হাড়ের
তলায় চাপা ধ্বংস আগুন উঠছে ফুঁসে
সব মানুষের আজাদী চায় সব মানুষে
স্বাধীনতা
স্বাধীনতা বলতে তুমি কি বোঝো সুলতান?
স্বাধীনতা আপনার চোখে ঠিক কীরকম? বলুন শান্তনু
যে তল্লাটে আগাছারও চেয়ে সস্তা মানুষের প্রাণ, প্রানের সম্মান
যে দেশে থাপ্পড় খেয়ে গাল পেতে না দেওয়াটা অপরাধ
তত্ত্বাবধান মানে বেপরোয়া ধর্ষণ যেখানে
একজনও গলা তুললে (কিম্বা না তুললে, অত কিছু তফাতও হয় না)
বেয়নেট কিম্বা বুলেটে
এফোঁড় ওফোঁড় হয়ে যাওয়াটাই শান্তি স্থাপন
কী বলবে তোমরা সেই এলাকার স্বাধীনতা নিয়ে?
উপদ্রুত? অরক্ষিত? আত্মরক্ষা পারে না বলে কি ওরা স্বাধীনতা পায় না কখনো?
কীসের উপদ্রব, আহা, আমাদের মহল্লায় আমরা হয়ে বাঁচতে চায় বলে
খানিকটা পাক অধিকৃত
বাকি অংশ বাহিনী শাসিত
কারো ভরসা মার্কিন, কারো হাতে হাত রাখে চীন
সীমান্তে অবস্থান বড় গুরুত্বের, বড্ড গুরুতর
হয় আমাদের হও, নয়তো ওদের হয়ে আমাদেরকে মারো
(ও পক্ষেও হয়ত ঠিক এমনি প্রচার হয়ে থাকে)
তারপর মরে যাও জনচিত্তরঞ্জন সুবাদে
এমনি করেই আমরা রক্ষা করি, এমনিই বরাভয় দানি,
জঙ্গিরা দুধ কা দুধ, সৈনিকেরা পানি কা হি পানি
কাশ্মীর ভারতের না পাকিস্তানি ঘাঁটি
সে আমরা বুঝে নেব কার্গিল কি উরি ময়দানে
দেশে দেশে কি ভীষণ মৃত্যুর আবহ
সে ঢাকতে দুয়েকটা ছোট যুদ্ধ খুব দরকারী
এসো মরো, তোমাকে নিপুণভাবে মারি
এ বাবদে জানতে পারবে আরো বিস্তারিত, যদি, নিতান্তই বেঁচে যাও প্রাণে
এরকম লম্বা হয়ে চলতে থাকবে শান্তি আলোচনা
বলো তবে রাবেয়া খাতুন, তুমি স্বাধীনতা নিয়ে কী বলবে
বলুন তো শান্তা পাল আজাদী শব্দের ঠিক কীবিধ দ্যোতনা?